ফুরায় না আচার 

প্রতিনিধি | সম্পাদকীয়

বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০১৯|১৫:৪৯:৪০ মি.


সম্পাদক

নিমেষ ফুরায়; ফুরায় না আচার। আপনি আচরি ধর্ম শেখায় না কেউ। কুড়ায় না মহত্তমের ত্যাগ। সবাই পেতে চায়। চায় অনেক কিছু। যারা চায় তারা জানে না—কোথায় থামতে হবে। থামতে জানাও শিক্ষা এবং প্রমিতির বিষয়। যা শিখতে হয়, শেখাতে হয়। কে শেখাবে, কাকে? গুরুরা এখন কোথায়? সমাজের কোথায় থাকেন তাঁরা? কোথায় পাবো তাঁকে? তাঁকে কেউ খোঁজে না। সুলুক সন্ধানের দিন মনে হয় আর ফিরবে না কখনও।

মানুষ সব পেয়েছির সময়ে বাস করছে এখন। কারো কোনো তাড়না নেই ভালোত্বের। তাড়না নেই মানসিক প্রশান্তির। সব তাড়নাই সঁপে দিয়েছে দ্রব্যগুণে। তাই মানবগুণ বেড়াতে গেছে; চলে গেছে সীমানার বাইরে। বাংলার পথে প্রান্তরে গান গেয়ে চলা বাউলের ঝোলায় আজও মাধুকরীর উপাচার ওঠে। কিন্তু প্রাণ জুড়ানো সুখ-দুঃখের সুর ভঞ্জনের সময় আর হয় না। মানুষ যে এখন হুঁশহারা। তার ধ্যান যে কেড়ে নিয়েছে গাছের কাঁঠাল। মৌসুম আসার আগেই গোঁফে তেল মেখে ছুটছে সে ঊর্ধ্বাশ্বাসে।

কাঁচা খেজুরের রস এখন শরীর হীম করে না। মানুষ নিপা’কে ভয় পায়। ভয় পায় আক্রান্ত হয়ে পড়ার যন্ত্রণাকে। ভয় পূর্বসূরীর ঐতিহ্যকে উত্তরসূরীর কাছে পৌঁছে দিতে পারে না কিছুই। কারণ সে জানে না পূর্বের পথ সঠিক ছিল কি না? জানে না বর্তমানেও সে সঠিক পথে চলছে কি না। তবুও নিমেষ ফুরায় অনিমেষের পথে। যেমনটি চলছিল অতীতে। তেমনটি চলবে ভবিষ্যতেও। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, চলছে কি সময় সঠিক পথে। সন্দিগ্ধজন বলছে—চলছে না। কেননা যার যা কাজ সে তা করছে না। করছে শুধু অচিন বন্দনা। যা বাজারে বিকোয় রূপার দামে।

তাইতো সরলা বাঁশের বাঁশি আর নিশিরাত চেনে না। বাজায় না যে কেউ; আন্ধার বটের তলে। শোনায় না যে রাত জাগা পাখিদের কাছে জগতের সুর। মানুষ এখন প্রকৃতিকে বুকে টানে না। টানবে কী করে? সময় যে তাকে টেনে নিয়ে গেছে কেজো জীবনের কাছে। যেখানে যন্ত্রই নিয়ন্ত্রণ করে বাউলের মাধুকরী। যেখানে আচরণ ভুলে খেমটা নাচে বাউলিনী, নাচে উদ্বাহু শ্রোতার আসর। সেখানেই তারা ভাবে সব পেয়েছি, আর কিছু নেই বাকী। আসলে কী তাই!

পাঠকের মন্তব্য Login Registration